প্রফেশনাল নেটওয়ার্কিং প্লাটফর্ম লিংকডইনকে কাজে লাগানোর বিভিন্ন উপায় রয়েছে। তবে এক্ষেত্রে নির্দিষ্ট লক্ষ্য অনুযায়ী ব্যবস্থা নিলে সবচেয়ে ভালো ফলাফল পাবেন। আপনার ক্যারিয়ারে লিংকডইনের ব্যবহার কীভাবে করতে পারেন, তা জানুন এ লেখায়।
চাকরিপ্রার্থীরা লিংকডইন কীভাবে ব্যবহার করবেন?
প্রোফাইলের ছবি আপডেটেড রাখুন।
প্রাইভেসির কারণে অনেকে অনলাইনে প্রোফাইল ছবি দিতে চান না। কিন্তু প্রোফাইল পিক আপলোড করে রাখলে লিংকডইনে ২১ গুণ বেশি প্রোফাইল ভিউ পাওয়া যায়। তাই আপনার আপডেটেড ছবি ব্যবহার করুন।
নিজের লক্ষ্য ও স্কিল সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা দিন।
লিংকডইনে ৪৫ হাজারেরও বেশি স্ট্যান্ডার্ডাইজড স্কিল যোগ করার ব্যবস্থা রয়েছে। তাই চাকরি পাবার জন্য প্রয়োজনীয় কোন স্কিল প্রোফাইলে বাদ রাখা উচিত নয়। এতে করে নিয়োগদাতারা আপনার দক্ষতা সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা পেয়ে যাবেন সহজে।
নিজের সাম্প্রতিক কাজের অভিজ্ঞতা আপডেটেড অবস্থায় রাখুন।
নিয়োগদাতারা সাধারণত এমন কাউকে নিয়োগ দিতে চান যার কাজের ধারাবাহিকতা তাদের প্রতিষ্ঠানে ভূমিকা রাখতে পারবে। তাই সাম্প্রতিক কাজের অভিজ্ঞতা থাকলে নিয়োগদাতাদের কাছে গুরুত্ব পাবেন।
চাকরি খোঁজার কথা হেডলাইনে জানিয়ে দিন।
ছবি, নাম আর হেডলাইন – লিংকডইনে কারো প্রোফাইল সার্চ করলে এ তিনটি জিনিস সামনে আসে। তাই আপনি কোন ধরনের চাকরি খুঁজছেন ও এর জন্য আপনি কেন যোগ্য, তা খুব সংক্ষেপে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করুন হেডলাইনের মাধ্যমে।
চাকরি খোঁজার কথা লিংকডইনকে জানান।
আপনি চাকরি খুঁজছেন কি না, তা একটি অপশনের মাধ্যমে লিংকডইনকে জানানো যায়। এতে করে নিয়োগদাতাদের প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে আপনার প্রোফাইলও যুক্ত হবার সম্ভাবনা বাড়ে।
প্রফেশনাল গ্রুপের সাথে যুক্ত থাকুন।
আপনি যে ধরনের কাজ করতে চান, সে কাজের সাথে সম্পর্কিত গ্রুপগুলো খুঁজে বের করে সেগুলোতে যোগ দিন। গ্রুপের পোস্টগুলোতে নিয়মিত চোখ রাখুন। পারলে নিজে পোস্ট করুন। এতে করে নেটওয়ার্কিংয়ের সুযোগ তৈরি হবে। তবে কোন গ্রুপে জয়েন করার সময় দেখে নিন গ্রুপটি অ্যাকটিভ কি না। নাহলে শুধু সময়ের অপচয় হবে।
নিজের বিশ্ববিদ্যালয়/কলেজের অ্যালামনাইয়ের সাথে সম্পর্ক রাখুন।
নিজের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আ্যলামনাইদের সাথে যুক্ত হবার মাধ্যমে প্রফেশনাল নেটওয়ার্ক বড় করতে পারবেন।
পছন্দের প্রতিষ্ঠানগুলোকে ফলো করুন।
বর্তমানে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের লিংকডইন পেইজ থাকে। সেখান থেকে প্রতিষ্ঠানগুলোর কাজ ও নিয়োগের ধরন সম্পর্কে একটি ধারণা পাওয়া যায়। ইন্টারভিউ দিতে যাবার আগে এটি আপনাকে সাহায্য করবে।
Jobs অপশন ব্যবহার করে চাকরি খুঁজুন।
লিংকডইনের সার্চ অপশন ব্যবহার করে চাকরি খোঁজার সুযোগ রয়েছে। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের তারিখ, কোম্পানি ও কাজের ধরন, অভিজ্ঞতা – আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী নানা ফিল্টার ব্যবহার করতে পারবেন।
শিক্ষাগত যোগ্যতার ব্যাপারে ঠিকভাবে লিখুন।
নিজের শিক্ষাগত যোগ্যতা লিংকডইনে এমনভাবে উল্লেখ করুন যেন প্রোফাইল ভিউয়াররা আপনার ডিগ্রি সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা পান।
ভলান্টিয়ারিংয়ের অভিজ্ঞতা থাকলে প্রোফাইলে যোগ করুন।
ভলান্টিয়ারিং আপনার কাজ করার আগ্রহকে প্রকাশ করে। তাই এমন কোন অভিজ্ঞতা থাকলে সম্ভাব্য নিয়োগদাতাদের কাছে গুরুত্ব পাবেন।
পেশাজীবীরা লিংকডইন কীভাবে ব্যবহার করবেন?
আপনার ইন্ডাস্ট্রির সাথে সম্পর্কিত প্রফেশনাল গ্রুপের সাথে যুক্ত থাকুন।
আপনার ইন্ডাস্ট্রির ব্যাপারে আপডেটেড থাকতে পারবেন লিংকডইন গ্রুপগুলোর মাধ্যমে। এছাড়া, কোন বিষয়ে যৌক্তিক মতামত ও অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে পারবেন অন্যদের সাথে। এতে করে ইন্ডাস্ট্রির অন্যান্য পেশাজীবীদের কাছে নিজের গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে পারবেন।
স্কিল ডেভেলপমেন্টে সময় দিন।
ক্যারিয়ারে এগিয়ে যাবার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায় হলো নিজের স্কিল বাড়ানো। তাই আপনার ইন্ডাস্ট্রিতে কাজে আসে এমন স্কিলগুলো আয়ত্ত করুন। এছাড়া ইতোমধ্যে যেসব ক্ষেত্রে আপনি দক্ষ, সেগুলোর ব্যাপারে আপডেটেড থাকুন।
চাকরি বা ক্যারিয়ার পরিবর্তন করার ক্ষেত্রে সময় নিয়ে প্রস্তুতি নিন।
আপনি যদি বর্তমান চাকরি পরিবর্তনের কথা ভাবেন, তাহলে নতুন চাকরিতে আগ্রহের কথা লিংকডইনকে জানিয়ে দিন। এছাড়া, নিয়মিত লিংকডইনের জব পোস্টগুলো নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করুন। সাথে সম্ভাব্য নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠানের পেইজগুলো ফলো করতে পারেন।
লিংকডইনের মাধ্যমে অন্যান্য চাকরিপ্রার্থীর বিপরীতে আপনার চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনা কতটুকু, তা প্রিমিয়াম সার্ভিসের সাবস্ক্রিপশনের মাধ্যমে জানা সম্ভব।
ক্যারিয়ারে লিংকডইনের ব্যবহার ঠিক কীভাবে করবেন, তার উপর নতুন সুযোগ আসার সম্ভাবনা নির্ভর করে। তাই নিজের লক্ষ্য আর যোগ্যতার আত্মমূল্যায়ন করুন। সে অনুযায়ী নিজের লিংকডইন প্রোফাইল সাজান ও ফিচারগুলো কাজে লাগান।