একজন অ্যাকাউন্ট্যান্ট একটি প্রতিষ্ঠানের সমস্ত লেনদেন রেকর্ড ও উপস্থাপন করেন। তার উপর হিসাব-নিকাশের যে দায়িত্ব থাকে, তা খুব দক্ষতার সাথে পালন করতে হয়। অন্যথায় পরবর্তীতে লেনদেনের হিসাব মেলাতে সে প্রতিষ্ঠান যথেষ্ট ঝামেলার মুখোমুখি হতে পারে।
এক নজরে একজন অ্যাকাউন্ট্যান্ট
সাধারণ পদবী: অ্যাকাউন্ট্যান্ট, অ্যাকাউন্টস অফিসার, অ্যাকাউন্টস এক্সিকিউটিভবিভাগ: অ্যাকাউন্টেন্সি, ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং
প্রতিষ্ঠানের ধরন: সরকারি, বেসরকারি, এনজিও, প্রাইভেট ফার্ম/কোম্পানি
ক্যারিয়ারের ধরন: ফুল টাইম
লেভেল: এন্ট্রি, মিড
এন্ট্রি লেভেলে অভিজ্ঞতা সীমা: ০ – ২ বছর
এন্ট্রি লেভেলে সম্ভাব্য গড় বেতন: ৳২০,০০০ – ৳২৫,০০০
এন্ট্রি লেভেলে সম্ভাব্য বয়স সীমা: ২৫ – ৩০ বছর
মূল স্কিল: গণিত, হিসাববিজ্ঞান, পরিসংখ্যান, ফিন্যান্স, ম্যানেজমেন্ট
বিশেষ স্কিল: নির্ভুল হিসাবের দক্ষতা, সূক্ষ্ম পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা, এক নাগাড়ে কঠোর পরিশ্রম করার মানসিকতা, ভুল সংশোধনের দক্ষতা
অ্যাকাউন্ট্যান্টের পেশা সম্পর্কিত প্রশ্ন
একজন অ্যাকাউন্ট্যান্ট কোথায় কাজ করেন?
যেহেতু একজন অ্যাকাউন্ট্যান্টের কাজ আর্থিক লেনদেন নিয়ে, সেহেতু সব ধরনের প্রতিষ্ঠানেই এ পদ পাওয়া যায়। যেমনঃ
- সরকারি অফিস
- ব্যাংক, বীমা ও অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান
- ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও শিল্পকারখানা
- হাসপাতাল ও অন্যান্য সেবা প্রতিষ্ঠান
- শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
- এনজিও
একজন অ্যাকাউন্ট্যান্টের কাজ কী?
প্রতিষ্ঠানভেদে অ্যাকাউন্ট্যান্টদের কাজ আলাদা হয়। সাধারণত বড় প্রতিষ্ঠানে একজন অ্যাকাউন্ট্যান্টের কাজ থাকে অনেক। তার মূল দায়িত্বের মধ্যে রয়েছেঃ
- প্রতিদিনের আর্থিক লেনদেন সংগ্রহ করা
- প্রতিষ্ঠানের লাভ-ক্ষতির হিসাব রাখা
- প্রতিদিনের আর্থিক লেনদেন বিশ্লেষণ করা
- আর্থিক লেনদেনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তৈরি করা
- আর্থিক লেনদেনে ব্যবহৃত কাগজপত্র (যেমনঃ ভাউচার) যাচাই করা
- প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতার হিসাব রাখা
- প্রতিষ্ঠানের আর্থিক অবস্থার উপর নিয়মিত প্রতিবেদন তৈরি করা
একজন অ্যাকাউন্ট্যান্টের কী ধরনের যোগ্যতা থাকতে হয়?
শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ অ্যাকাউন্ট্যান্ট হতে হলে আপনাকে অবশ্যই অ্যাকাউন্টিংয়ের উপর স্নাতক ডিগ্রি থাকতে হবে। সেটা বিবিএ (Bachelor of Business Administration) হতে পারে, বি.কমও (Bachelor of Commerce) হতে পারে। স্নাতকোত্তর পর্যায়ে ডিগ্রি থাকলে আরো ভালো।
কিছু ক্ষেত্রে ফিন্যান্সে ডিগ্রি থাকা সত্ত্বেও অ্যাকাউন্ট্যান্ট পদে চাকরির জন্য আবেদন করা যায়। তবে প্রফেশনাল পরীক্ষার মাধ্যমে যদি নিচের পেশাগুলোতে জড়িত হবার যোগ্যতা অর্জন করেন, তাহলে অগ্রাধিকার পাবেনঃ
- চার্টার্ড গ্লোবাল ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্ট (CGMA)
- চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট (CA)
- চার্টার্ড সার্টিফাইড অ্যাকাউন্ট্যান্ট (‘ACCA’ স্বীকৃত)
- সার্টিফাইড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্ট (CMA)
বয়সঃ প্রতিষ্ঠানসাপেক্ষে বয়সের সীমা নির্ধারিত হয়। সাধারণত আপনার বয়স কমপক্ষে ২৪ বছর হতে হবে।
অভিজ্ঞতাঃ এ পেশায় অভিজ্ঞদের প্রাধান্য রয়েছে। সাধারণত ২-৩ বছরের অভিজ্ঞতা কাজে আসে। অভিজ্ঞতা না থাকলে সহকারী অ্যাকাউন্ট্যান্টের কাজ পেতে পারেন।
একজন অ্যাকাউন্ট্যান্টের কী ধরনের দক্ষতা ও জ্ঞান থাকতে হয়?
- গাণিতিক হিসাব করার দক্ষতা
- এমএস এক্সেল ও অন্যান্য অ্যাকাউন্টিং সফটওয়্যারের মাধ্যমে নির্ভুলভাবে হিসাব-নিকাশ করার দক্ষতা
- আর্থিক বিবরণী তৈরি ও বিশ্লেষণে দক্ষতা
- খুঁটিনাটি বিষয় বিশ্লেষণ করার দক্ষতা
- মনোযোগের সাথে এক নাগাড়ে কাজ চালিয়ে যাবার সামর্থ্য
একজন অ্যাকাউন্ট্যান্টের সামান্য ভুলের কারণে প্রতিষ্ঠানের বড় ক্ষতি হবার সম্ভাবনা থাকে। তাই এ পেশায় আপনাকে অত্যন্ত সতর্কতার সাথে কাজ করতে হবে।
কোথায় পড়বেন অ্যাকাউন্টিং?
বাংলাদেশের অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাকাউন্টিং নিয়ে পড়াশোনা করতে পারবেন। নিচের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগ থেকে বিবিএ ও এমবিএ ডিগ্রি দেয়া হয়ঃ
- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
- চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
- রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
- খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়
- ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়
নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি – বাংলাদেশ, ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটিসহ বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়েও বিবিএ-এমবিএ পড়া যায়। এছাড়া, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ভুক্ত অধিকাংশ কলেজে বিবিএ ও বি.কম কোর্সে পড়ার ব্যবস্থা আছে।
একজন অ্যাকাউন্ট্যান্টের মাসিক আয় কেমন?
একজন অ্যাকাউন্ট্যান্টের মাসিক আয় নির্ভর করে তার শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার উপর। তবে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানে শুরুতে ৳২০,০০০ – ৳২৫,০০০ দেওয়া হয়। তবে কয়েক বছরের অভিজ্ঞতা থাকলে বেতন ৳৩৫,০০০ – ৳৪০,০০০ হয়ে থাকে।
একজন অ্যাকাউন্ট্যান্টের ক্যারিয়ার কেমন হতে পারে?
একজন অ্যাকাউন্ট্যান্টের ক্যারিয়ার অনেকটা সুনিশ্চিত। দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার পরিবর্তনের সাথে সাথে এ পেশার চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু বর্তমানে শুধু অ্যাকাউন্টিংয়ে স্নাতক বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিয়ে চাকরির বাজারে কিংবা কর্মক্ষেত্রে খুব একটা সুবিধা করা যায়না। তাই প্রফেশনাল কোর্স ও ট্রেনিংয়ের মাধ্যমে দক্ষতা বাড়ানোর উপর মনোযোগ দিতে হবে আপনাকে।
কাজের ধরনের জটিলতার কারণে বহু প্রতিষ্ঠানে এন্ট্রি লেভেলে সরাসরি এ পদে নিয়োগ দেয়া হয় না। এসব ক্ষেত্রে জুনিয়র অ্যাকাউন্ট্যান্ট হিসাবে কাজ করতে পারেন। ৩-৫ বছরের অভিজ্ঞতা অর্জনের পর মিড লেভেলের পদে উন্নীত হবেন।
আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ডিগ্রি (যেমনঃ চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট) থাকলে তুলনামূলকভাবে কম সময়ে প্রতিষ্ঠানের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে কাজ করার সুযোগ পাবেন।
হিসাবরক্ষণের এ ক্যারিয়ারে সর্বোচ্চ পদ হিসাবে অ্যাকাউন্টিং বা ফিন্যান্স বিভাগের প্রধানকে বিবেচনা করা হয়।
তথ্যসূত্র
- সিডনি ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, বিজ্ঞপ্তির তারিখঃ ১২ এপ্রিল ২০১৮, বিডিজবস ডট কম
- ওয়াইজ লিংক ট্রেডিং কোম্পানি, বিজ্ঞপ্তির তারিখঃ ১২ এপ্রিল ২০১৮, বিডিজবস ডট কম
- বনানী সোসাইটি, বিজ্ঞপ্তির তারিখঃ ২৪ এপ্রিল ২০১৮, বিডিজবস ডট কম
- ওয়েবঅ্যাবল ডিজিটাল, বিজ্ঞপ্তির তারিখঃ ২৫ এপ্রিল ২০১৮, বিডিজবস ডট কম
- বান্না বিজয় গ্রুপ, বিজ্ঞপ্তির তারিখঃ ২৮ এপ্রিল ২০১৮, বিডিজবস ডট কম
- লাইফস্টাইল সলিউশনস লিমিটেড, বিজ্ঞপ্তির তারিখঃ ২৯ এপ্রিল ২০১৮, বিডিজবস ডট কম
Excellent guideline. thanks a lot sir
Thanks sir for the suggestion .
Thank you so much for all of this effective guidance.
Thanks for this outstanding job♥