বাংলাদেশে অ্যাগ্রো-ফুড বিজনেসে চ্যালেঞ্জ যেমন রয়েছে, তেমনি রয়েছে সম্ভাবনা। তবে এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর জন্য ভালো পূর্বপ্রস্তুতি প্রয়োজন। এবারের লেখায় জেনে নিন কীভাবে সে প্রস্তুতি নিতে পারেন।
১. সঠিকভাবে ব্যবসার রেজিস্ট্রেশন করান।
অ্যাগ্রো-ফুড বিজনেসের ধরন ও আকারের ভিত্তিতে বিভিন্ন ধরনের কাগজপত্র দরকার হবে আপনার। যেমনঃ
– ট্রেড লাইসেন্স
– ভ্যাট লাইসেন্স
– কীটনাশক ব্যবহারের লাইসেন্স
– ইমপোর্ট/এক্সপোর্টের লাইসেন্স
প্রয়োজনীয় প্রায় সকল লাইসেন্স মিউনিসিপাল অফিস থেকে পাওয়া সম্ভব। সঠিক প্রক্রিয়ায় আবেদন সম্পন্ন করে প্রয়োজনীয় ফি পরিশোধ করলে আর শর্তাবলি পূরণ সাপেক্ষে ব্যবসার অনুমতি ও লাইসেন্স পাবেন। এ ব্যাপারে সহায়তা নিতে পারেন বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথোরিটি (BIDA) থেকে। এটি একটি বাংলাদেশি সরকারি সংস্থা যা বেসরকারি বিনিয়োগে যাবতীয় সাহায্য দিয়ে থাকে।
২. উপযুক্ত জমি নির্বাচন করুন।
আপনার ব্যবসার জন্য জমি পছন্দ করার সময় পারিপার্শ্বিক পরিবেশ যেন পশুপালনের উপযোগী হয়, সেদিকে খেয়াল রাখুন। এছাড়া এর অবস্থান হতে হবে শহরের কাছে কোলাহল মুক্ত কোন জায়গায়। এতে করে আপনার সাপ্লাই চেইন ব্যবস্থাপনা ঠিক রাখতে পারবেন। যেমন, সাভার এলাকায় ডেইরি ফার্ম গড়ে উঠেছে। এর সাথে রাজধানীর দুরত্ব খুব বেশি না হওয়ায় আর শক্তিশালী যোগাযোগ ব্যবস্থা থাকায় এটি অ্যাগ্রো-ফুড বিজনেসের জন্য একটি উপযুক্ত স্থান।
৩. প্রয়োজনীয় পুঁজি সংগ্রহ করুন।
অ্যাগ্রো-ফুড বিজনেস উদ্যোক্তাদের জন্য সরকারি ও বেসরকারি বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি ঋণ দিয়ে থাকে। তাই ঠিক কী পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করতে হবে, সে ব্যাপারে পরিষ্কার ধারণা ও পরিকল্পনা থাকা প্রয়োজন।
৪. দক্ষ কর্মী নিয়োগ দিন।
এ ব্যবসায় কায়িক শ্রম যেমন প্রয়োজন, তেমনি প্রয়োজন মানসিক শ্রম। তাই কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে ভালোমতো যাচাই-বাছাই করুন। যেমন, শ্রমিকদের ক্ষেত্রে পণ্য বহন আর কৃষিকাজের মেশিনের ব্যবহার জানা আবশ্যক। আবার ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে কৃষি বিষয়ে গ্র্যাজুয়েট বা ডিপ্লোমাধারীদের প্রাধান্য দেয়া উচিত। এছাড়া কর্মীদের দক্ষতা বাড়ানোর জন্য নিয়মিত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রাখুন।
৫. দীর্ঘমেয়াদী লাভের কথা বিবেচনা করা ক্লায়েন্ট নির্ধারণ করুন।
অ্যাগ্রো-ফুড বিজনেসে আর্থিক সাফল্য পেতে বেশ সময় লাগে। তাই আপনার ব্যবসার স্বল্পমেয়াদী ও দীর্ঘমেয়াদী নিরাপত্তার কথা ভেবে উপযুক্ত ক্লায়েন্টের কাছে যান। যেমন, বড় বড় প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি করে পণ্য সরবরাহ করে অতিরিক্ত উৎপাদিত পণ্য খোলাবাজারে বিক্রি করলে সর্বোচ্চ লাভ অর্জন সম্ভব। এতে একদিকে দীর্ঘমেয়াদী ক্লায়েন্ট যেমন পাবেন, তেমনি হুট করে লোকসানের সম্মুখীন হবেন না।