একজন ওয়েব ডিজাইনার বিভিন্ন ওয়েবসাইট ও অ্যাপ্লিকেশন তৈরির জন্য প্রাথমিক পরিকল্পনা, ডিজাইন ও ইউজার এক্সপেরিয়েন্স (UX) নিয়ে কাজ করে থাকেন। এ পেশায় কাজ করতে টেকনিক্যাল ও নন-টেকনিক্যাল দক্ষতার প্রয়োজন হবে আপনার। বর্তমানে দেশে-বিদেশে এ পেশার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।
একজন ওয়েব ডিজাইনার বিভিন্ন শিল্পে চাকরি করা ছাড়াও স্বাধীনভাবে কাজ করার প্রচুর সুযোগ পান। প্রতিষ্ঠানভেদে শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা আলাদা হতে পারে। কিন্তু ওয়েব ডিজাইনের উপর প্রাতিষ্ঠানিক ডিগ্রি থাকলে তা কাজ পাবার জন্য সুবিধাজনক।
এক নজরে একজন ওয়েব ডিজাইনার
সাধারণ পদবী: ওয়েব ডিজাইনারবিভাগ: কম্পিউটার ও ইন্টারনেট
প্রতিষ্ঠানের ধরন: সরকারি, প্রাইভেট ফার্ম/কোম্পানি, ফ্রিল্যান্সিং, অন্যান্য
ক্যারিয়ারের ধরন: পার্ট-টাইম, ফুল টাইম
লেভেল: এন্ট্রি, মিড, টপ
অভিজ্ঞতা সীমা: কাজ ও প্রতিষ্ঠানসাপেক্ষ
এন্ট্রি লেভেলে সম্ভাব্য বেতন সীমা: ৳২৫,০০০ – কাজ, প্রতিষ্ঠান ও অভিজ্ঞতাসাপেক্ষ
সম্ভাব্য বয়স সীমা: প্রতিষ্ঠানসাপেক্ষ
মূল স্কিল: কোডিং, ডিজাইন ও গ্রাফিক্স
বিশেষ স্কিল: সৃজনশীলতা, বিশ্লেষণী ক্ষমতা, সমস্যা সমাধানের দক্ষতা
ওয়েব ডিজাইনারের পেশা সম্পর্কিত প্রশ্ন
একজন ওয়েব ডিজাইনার কোথায় কাজ করেন?
মূলত আইটি কোম্পানি ও ফার্মগুলোতে ওয়েব ডিজাইনারদের কাজের ক্ষেত্র সবচেয়ে বেশি। তুলনামূলকভাবে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে সরাসরি চাকরির সুযোগ কম। অবশ্য এসব প্রতিষ্ঠান সাধারণত আইটি সংক্রান্ত কাজ প্রজেক্ট আকারে সফটওয়্যার ও ডেভেলপার কোম্পানিগুলোকে দিয়ে থাকে। তাই নির্ভরযোগ্য ক্যারিয়ার গড়তে ওয়েব ডিজাইনারদের সমস্যা হয় না।
ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে ওয়েব ডিজাইনের আন্তর্জাতিক মার্কেট যথেষ্ট বড়। আপওয়ার্ক কিংবা গুরু ডট কমের মতো প্লাটফর্মগুলোতে কাজ খুঁজে নিতে পারেন আপনি। এক্ষেত্রে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ওয়েব ডিজাইনাররা সবচেয়ে বেশি উপার্জন করতে সক্ষম।
একজন ওয়েব ডিজাইনারের কাজ কী?
প্রতিষ্ঠান অনুযায়ী ওয়েব ডিজাইনারের কাজ আলাদা হয়ে থাকে। এছাড়া ওয়েবসাইট ও অ্যাপ্লিকেশনের ধরনও একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্ণায়ক।
সাধারণত যে ধরনের কাজ ওয়েব ডিজাইনরা করে থাকেন, তার মধ্যে রয়েছে –
- ক্লায়েন্টের চাহিদাগুলো সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা নেয়া ও পুরো কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত এ ব্যাপারে যোগাযোগ রাখা;
- ওয়েবপেইজ/ওয়েবসাইট/অ্যাপ্লিকেশনের প্রাথমিক লেআউট তৈরি করা;
- প্রজেক্টের জন্য গ্রাফিক্স, অ্যানিমেশন কিংবা ডিজিটাল ফটোগ্রাফি ডিজাইন করা;
- ক্লায়েন্টের কাছে প্রাথমিক ডিজাইন উপস্থাপন করা;
- প্রয়োজনীয় কোড লেখা;
- দরকার হলে কন্টেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম নিয়ে কাজ করা;
- প্রজেক্ট বা প্রতিষ্ঠানের সাথে ওয়েবসাইট/অ্যাপ্লিকেশনের ডিজাইনের সামঞ্জস্য বজায় রাখা;
- ওয়েবপেইজ/অ্যাপ্লিকেশনের বিভিন্ন কন্টেন্ট এডিট করা ও বারবার এর কার্যকারিতা যাচাই করা;
- কাজ শেষ হবার পর ক্লায়েন্টের কাছে প্রজেক্ট হস্তান্তর করা;
- প্রয়োজন হলে পরবর্তীতে ক্লায়েন্টকে টেকনিক্যাল সহায়তা দেয়া।
কী ধরনের যোগ্যতা থাকতে হয় একজন ওয়েব ডিজাইনারের?
ওয়েব ডিজাইনে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার চেয়েও কাজের দক্ষতা ও জ্ঞান থাকা জরুরি। এরপরও নিচের বিষয়গুলোতে ডিগ্রি থাকলে প্রাথমিক পর্যায়ে আপনার যোগ্যতা নিয়ে একজন চাকরিদাতা ভালো ধারণা পেতে পারেন –
- কম্পিউটার সায়েন্স;
- ওয়েব ডিজাইন;
- গ্রাফিক ডিজাইন;
- মাল্টিমিডিয়া ডিজাইন;
- ডিজিটাল মিডিয়া প্রোডাকশন;
- ইনফরমেশন টেকনোলজি;
- সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং।
প্রাতিষ্ঠানিক যোগ্যতা থাকুক বা না থাকুক, কাজের পোর্টফোলিও থাকলে একজন ওয়েব ডিজাইনারের গ্রহণযোগ্যতা অনেক বেড়ে যায়। আপনি যদি বিভিন্ন ছোট কোর্সের মাধ্যমে বা নিজে নিজে ওয়েব ডিজাইনের কাজ শেখেন, তাহলে আপনার জন্য পোর্টফোলিও থাকা খুব গুরুত্বপূর্ণ। অবশ্য ডিগ্রিধারী ডিজাইনারদের ক্ষেত্রেও একই ব্যাপার প্রযোজ্য।
একজন ওয়েব ডিজাইনারের কোন কোন দক্ষতা ও জ্ঞান থাকতে হয়?
প্রজেক্টের উপর টেকনিক্যাল জ্ঞানের ধরন নির্ভর করে। এরপরও সাধারণ উদাহরণ হিসাবে নিচের স্কিলগুলোর কথা বলা যায় –
- কোডিং: HTML, CSS, JavaScript, jQuery, Dreamweaver
- ডিজাইন ও গ্রাফিক্স: Photoshop, Illustrator, InDesign
- কন্টেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম: WordPress, Drupal, Joomla
বহু কোম্পানিতে ওয়েব ডেভেলপমেন্টের কিছু কাজ ওয়েব ডিজাইনারদের দিয়ে করানো হয় বলে অ্যাপ্লিকেশন তৈরির কোডিং (যেমনঃ PHP, Python) নিয়েও ধারণা থাকার দরকার হয়।
নন-টেকনিক্যাল জ্ঞানের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো –
- সৃজনশীল উপায়ে ও যৌক্তিকভাবে সমস্যা সমাধানের দক্ষতা;
- বিশ্লেষণী ক্ষমতা, যা খুঁটিনাটি বিষয়গুলো পর্যবেক্ষণে সাহায্য করতে পারে;
- নিজে নিজে কাজ করার পাশাপাশি অন্যদের সাথেও কাজ করার মানসিকতা থাকা;
- বিভিন্ন ধরনের কাজ একসাথে সামলানোর দক্ষতা।
ওয়েব ডিজাইন কোথায় শিখবেন?
বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল, কম্পিউটার সিস্টেম ডিজাইন কিংবা ইনফর্মেশন সিস্টেমের উপর অনার্স-মাস্টার্স ডিগ্রি নিতে পারেন।
বিকল্প উপায় হিসাবে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে নিচের বিষয়গুলোর উপর কোর্স করতে পারেন –
- ওয়েব ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট;
- মাল্টিমিডিয়া ডিজাইন;
- ইউজার এক্সপেরিয়েন্স (UX) ও ইউজার ইন্টারফেস (UI) ডিজাইন;
- ডিজিটাল ইমেজিং;
- প্রোগ্রামিং।
একজন ওয়েব ডিজাইনারের মাসিক আয় কেমন?
আমাদের দেশে অভিজ্ঞতা ছাড়া বা স্বল্প অভিজ্ঞ ওয়েব ডিজাইনারের আনুমানিক গড় আয় মাসিক ৳২৫,০০০ টাকা। দেশের বাইরে গেলে যা মাসিক ৳৪০০,০০০ টাকা থেকে ৳৭০০,০০০ টাকা বা তার বেশিও হতে পারে।
ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে ঘণ্টা প্রতি গড়ে ১০-১৫ ডলার অর্জন করা সম্ভব। তবে এজন্য চমৎকার পোর্টফোলিও থাকার কোন বিকল্প নেই।
ক্যারিয়ার কেমন হতে পারে একজন ওয়েব ডিজাইনারের?
শুরুতে শুধু প্রজেক্ট নির্ভর ছোট বা মাঝারি আকারের কাজ করলেও চার-পাঁচ বছরের মধ্যে সিনিয়র ওয়েব ডিজাইনার পদে উন্নীত হবেন। এক্ষেত্রে বড় আকারের প্রজেক্ট বা বড় মাপের ক্লায়েন্টের সাথে কাজ করার সুযোগ পাবেন। এছাড়া আপনার দক্ষতা আর নন-টেকনিক্যাল জ্ঞানের ভিত্তিতে নিজের দল চালানোর কাজ পেতে পারেন। কনসালট্যান্ট হিসাবেও সার্ভিস দিতে পারেন অন্যদের।
তথ্যসূত্র
- ‘ওয়েব ডিজাইনার’, ২৮ জানুয়ারি ২০১৬, দৈনিক যুগান্তর
- আইএমটি৩৬০ লিমিটেড, বিজ্ঞপ্তির তারিখঃ ১৮ মার্চ ২০১৮, বিডিজবস ডট কম
- অ্যাডি সফট লিমিটেড, বিজ্ঞপ্তির তারিখঃ ২৪ মার্চ ২০১৮, বিডিজবস ডট কম
Want to join any it company . I have 1 year experience in graphics and web designing .
আপনি ইতোমধ্যে কোথাও অ্যাপ্লাই করেছেন কি? আপনাকে কীভাবে আমরা সাহায্য করতে পারি?
I am now in the first year of Geography Honors But I want to be a web designer. But I don’t know exactly what to do next. Which course should I take now?
আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ ।।।
পোস্টটি অনেক তথ্যবহুল ছিল । থ্যাংক ইউ ।
তথ্যবহুল পোস্ট এর জন্য ধন্যবাদ ।
ওয়েব ডিজাইনার হিসাবে কিভাবে কাজ পেতে পারি বাংলাদেশে। দক্ষতা HTML5/CSS3/JAVASCRIPT/JQUARY/BOOTSTRAP4। part time /full time
চাকরির সাইটগুলোতে দেয়া বিজ্ঞাপন দেখে অ্যাপ্লাই করুন। পোর্টফোলিও ভালো করতে হলে ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইটগুলোতে সার্ভিস দিন।
I love this job
I love this job