নেফ্রোলজিস্ট

একজন নেফ্রোলজিস্ট কিডনি সংশ্লিষ্ট যে কোন ধরনের রোগ সনাক্ত, প্রতিকার ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা করে থাকেন। কিডনি রোগ বৃদ্ধির সাথে সাথে বাংলাদেশে নেফ্রোলজিস্টের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

সাধারণ পদবী: নেফ্রোলজিস্ট/কিডনি রোগ বিশেষজ্ঞ  

বিভাগ:  স্বাস্থ্য ও সেবা

প্রতিষ্ঠানের ধরন: সরকারী-বেসরকারী হাসপাতাল/চিকিৎসা কেন্দ্র, বিশেষায়িত হাসপাতাল ও ইন্সটিটিউট

ক্যারিয়ারের ধরন: পার্ট-টাইম, ফুল টাইম।

লেভেল: মিড।

অভিজ্ঞতা সীমা: অন্তত ৫/৬ বছর হাসপাতালে কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।

সম্ভাব্য বেতন সীমা: সরকারি চাকুরিতে সহকারী অধ্যাপক/জুনিয়র কন্সাল্ট্যান্ট হিসেবে গ্রেড-৬ অনুযায়ী বেতন ৩৭-৬৭ হাজার টাকা হয়ে থাকে। এছাড়া প্রাইভেট প্র্যাকটিসে রোগী প্রতি ফি অভিজ্ঞতা ও স্থানভেদে ৫০০ থেকে ২০০০ হয়ে থাকে

সম্ভাব্য বয়স সীমা: নির্দিষ্ট বয়স-সীমা নেই।

মূল স্কিল: কিডনি রোগ সম্পর্কে ধারণা ও চিকিৎসার জ্ঞান

বিশেষ স্কিল:  কিডনি ডায়ালাইসিস ও ট্রান্সপ্ল্যান্ট এ দক্ষতা

একজন কোন ধরনের প্রতিষ্ঠান বা শিল্পে কাজ করেন?

প্রায় সব মানসম্মত সামরিক/সরকারি/বেসরকারি হাসপাতাল, চিকিৎসা কেন্দ্রে নেফ্রোলজিস্ট প্রয়োজন। এছাড়া কিডনি রোগের জন্য বিশেষায়িত হাসপাতালে নেফ্রোলজিস্ট হিসেবে কাজের সুযোগ অনেক বেশি।

একজন নেফ্রোলজিস্ট কী ধরনের কাজ করেন?

একজন নেফ্রোলজিস্ট কিডনির যে কোন সমস্যা সনাক্ত, রোগ নিরাময় ও প্রতিকার করে থাকেন। তিনি প্রয়োজন অনুযায়ী একজন কিডনি রোগীকে ব্যবস্থাপত্র প্রদান করেন। কিডনিতে পাথর বা অন্যান্য ছোট অস্ত্রোপচার করে থাকেন। প্রয়োজন হলে কিডনি ডায়ালাইসিস কিংবা কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট এর ব্যবস্থা করেন। সাধারণত একজন নেফ্রোলজিস্ট নিজে কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট না করে সার্জনের শরণাপন্ন হন। তবে তিনি প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা ও ঔষধ-পত্র প্রদান করে থাকেন। কোন রোগীর যদি কিডনির সাথে যুক্ত অন্য কোন অঙ্গ বা মূত্রতন্ত্রে সমস্যা থাকে তবে তা অনুধাবন করে রোগীকে ইউরোলজিস্ট বা উপযুক্ত ব্যক্তির শরণাপন্ন হবার পরামর্শ দিতে দেন।

একজন নেফ্রোলজিস্টের  শিক্ষাগত যোগ্যতা কী?

নেফ্রোলজি বিশেষজ্ঞ হতে চাইলে অবশ্যই এমবিবিএস পাশের পর নেফ্রোলজিতে এফসিপিএস/এফআরসিএস/এমএস/এমডি/পিএইচডি ডিগ্রী থাকতে হবে । উচ্চতর ডিগ্রি ও অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করেই একজন নেফ্রোলজিস্ট পদোন্নতি পান।

একজন নেফ্রোলজিস্টের  কী কী দক্ষতা ও জ্ঞান থাকতে হয়?

একজন নেফ্রোলজিস্টকে অবশ্যই কিডনি ও সংযুক্ত অন্যান্য অঙ্গ সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে। কিডনির যে কোন ধরনের রোগ সম্পর্কে জ্ঞান রাখতে হবে এবং কিডনির যে কোন রোগের আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি জানতে হবে। ডায়ালাইসিস পর্যবেক্ষনের দক্ষতা থাকার পাশাপাশি কিডনি ট্র্যান্সপ্ল্যান্টে কেউ দক্ষ হলে অত্যন্ত সফল ক্যারিয়ার গড়ে তোলা সম্ভব।

কোথায় পড়াশোনা করবেন নেফ্রোলজিস্ট হতে চাইলে?

এমবিবিএস পাশের পর ইউরোলজিতে এম.ডি. পড়বার সুযোগ আছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (BSMMU)এছাড়া বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিসিয়ানস অ্যান্ড সার্জনস (BCPS) এর অধীনে নেফ্রোলজিতে এফসিপিএস ডিগ্রী দেওয়া হয়

একজন নেফ্রোলজিস্টের কাজের ক্ষেত্র ও সুযোগ কেমন?

বাংলাদেশে কিডনি রোগীর অনুপাতে নেফ্রোলজিস্টের সংখ্যা অতি নগণ্য। এজন্য নেফ্রোলজিস্ট হিসেবে কাজের সুযোগ অনেক বেশি। একজন নেফ্রোলজিস্ট সরকারি মেডিকেল হাসপাতাল ও জেলা সদর হাসপাতালের নেফ্রোলজি বিভাগে বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডার হিসেবে কাজের সুযোগ পান। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল হাসপাতাল, বারডেম, সেনাবাহিনীর মেডিকেল কোর এবং কিডনি রোগের জন্য বিশেষায়িত হাসপাতাল যেমন ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ কিডনি ডিজিসেস এন্ড ইউরোলজি, কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতাল ও রিসার্চ ইন্সটিটিউট সহ অন্যান্য বেসরকারি কিডনি হাসপাতালে নেফ্রোলজিস্টদের ব্যাপক চাহিদা। এছাড়া ল্যাবএইড স্পেশালাইজড হাসপাতাল, পপুলার হাসপাতাল, সিটি হাসপাতাল, স্কোয়ার হাসপাতাল সহ অন্যান্য মানসম্মত বেসরকারি হাসপাতালের নেফ্রোলজি বিভাগে কাজের সুযোগ আছে।

একজন নেফ্রোলজিস্টের মাসিক আয় কেমন?

সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত একজন নেফ্রোলজিস্ট অধ্যাপক হিসেবে গ্রেড-৩, সহযোগী অধ্যাপক বা সিনিয়র কন্সাল্ট্যান্ট হিসেবে গ্রেড-৪ ও সহকারী অধ্যাপক বা জুনিয়র কন্সাল্ট্যান্ট হিসেবে গ্রেড- ৬ এর বেতন পান। এছাড়া বেসরকারি হাসপাতালে সাময়িকভাবে রোগী দেখে ও চিকিৎসা করে অনেক টাকা উপার্জন সম্ভব। বাংলাদেশে নেফ্রোলজিস্টের সংখ্যা কম বিধায় দক্ষ ও অভিজ্ঞ হলে বড় বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে উচ্চ বেতনে চাকুরি করা সম্ভব। দক্ষ ও অভিজ্ঞ হলে মাসিক উপার্জন কয়েক লাখ টাকা হয়ে থাকে।

ক্যারিয়ার কেমন হতে পারে একজন নেফ্রোলজিস্টের?

বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডার হিসেবে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে কর্মরত হলে নেফ্রোলজিতে উচ্চতর ডিগ্রি প্রাপ্তির পর পদের প্রাপ্যতা সাপেক্ষে মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক বা জেলা সদর হাসপাতালের জুনিয়র কন্সাল্ট্যান্ট হিসেবে পদোন্নতি হয়। এর পরের পদগুলো যথাক্রমে সহযোগী অধ্যাপক/সিনিয়র কন্সাল্ট্যান্ট এবং অধ্যাপক। তবে এসকল পদে পদোন্নতির জন্য একাধিক গবেষণপত্র থাকতে হবে, দক্ষ এবং যোগ্য হতে হবে। পদোন্নতি পদের প্রাপ্যতার উপরও নির্ভর করে। একজন নেফ্রোলজিস্ট হাসপাতালের নেফ্রোলজি বিভাগের প্রধান এমনকি মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ হবারও সুযোগ পান। এছাড়া ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ কিডনি ডিজিসেস অ্যান্ড ইউরোলজি, কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইন্সটিটিউটের প্রধান সহ অন্যান্য উচ্চ পদে কাজের সুযোগ পান। আজকাল বড় মানের বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে সমৃদ্ধ নেফ্রোলজি বিভাগ চালু হয়েছে। দক্ষ এবং অভিজ্ঞ হলে বেসরকারি হাসপাতাল গুলোতেও ভালো ক্যারিয়ার গড়ে তোলা সম্ভব।

 

Leave a Comment