সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যাপক জনপ্রিয়তার কারণে তা শুধু ব্যক্তিগত ব্যবহারের মাধ্যমে সীমাবদ্ধ নেই। বরং ব্যবসায়িক আর প্রাতিষ্ঠানিক কাজেও এর বহুল ব্যবহার লক্ষণীয়। আপনি যদি কোন ব্যবসা চালিয়ে থাকেন, তাহলে সোশ্যাল মিডিয়া হতে পারে আপনার প্রচারণার একটি উপযুক্ত মাধ্যম। এর জন্য ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম, টুইটার, গুগল প্লাস, লিংকডইনসহ বিভিন্ন প্লাটফর্মে ব্যবসায়িক অ্যাকাউন্ট রাখার ব্যবস্থা রয়েছে। আপনার ব্যবসার প্রসারে সোশ্যাল মিডিয়া কীভাবে কাজে লাগাতে পারেন, তা নিয়ে এবারের লেখা। নির্দিষ্ট কোন প্লাটফর্মের উপর জোর দেয়া হয়নি এখানে। বরং সাধারণ কিছু পরামর্শ দেয়া রয়েছে।
আপনি কাদের কাছে ব্যবসায়িক প্রচারণা চালাতে চান, সে সম্পর্কে ধারণা রাখুন।
সোশ্যাল মিডিয়ার পরিসর অনেক বড়। এগুলোতে বিভিন্ন বয়সের ব্যবহারকারী থাকলেও তাদের সবার চাহিদা আপনার পণ্য বা সার্ভিসের সাথে যায় না। তাই ঠিক কোন ধরনের কাস্টমারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করবেন, সে ব্যাপারে পরিকল্পনা করুন। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে সমস্যা হলে জরিপ বা সার্ভে চালানোর ব্যবস্থা করুন। মনে রাখুন যে, সোশ্যাল মিডিয়াতে সময় দেয়া আপনার জন্য এক ধরনের ব্যবসায়িক বিনিয়োগ।
ব্র্যান্ড তৈরিতে মনোযোগ দিন।
নির্দিষ্ট কিছু পণ্য বা সার্ভিসের নাম নিয়ে আমাদের একটা ভালো ধারণা থাকে। আমরা সে পণ্য বা সার্ভিসের সাথে যুক্ত প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে না জানলেও এ ভালো ধারণা কাজ করে। এখানেই ব্র্যান্ডিংয়ের গুরুত্ব।
সোশ্যাল মিডিয়াতে বাকি আর দশটা ব্যবসার মতো শুধু নিজের ব্যবসার গুণগান না করে ফলোয়ারদের জন্য আকর্ষণীয় কিছু পোস্ট করুন। ধরা যাক, আপনি শাড়ি বিক্রি করেন। এক্ষেত্রে শুধু শাড়ির দামসহ ছবি পোস্ট না করে কোন উপলক্ষে কেমন শাড়ি ভালো মানায়, তা নিয়ে একটা লেখা প্রকাশ করুন। অথবা এমন একটি ভিডিও বানান যেখানে একজন শাড়ির ডিজাইনার দেখাচ্ছেন তার কাজের প্রক্রিয়া। এ ধরনের কন্টেন্ট নিয়মিত তৈরি করে ফলোয়ারদের সাথে শেয়ার করুন। এতে করে আপনার পরিচিতি শাড়ির ব্যবসার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না। বরং শাড়িকে কেন্দ্র করে একটি ব্র্যান্ড আপনি গড়ে তুলতে পারবেন ধীরে ধীরে।
কাস্টমারদের ভাষায় কথা বলুন।
ব্যবসার ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক ভাষার ব্যবহার লক্ষণীয় ও প্রত্যাশিত। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়াতে অধিকাংশ মানুষ হালকা মেজাজে থাকেন। তাই সিরিয়াস ভাষায় কথাবার্তা চলে কম। এ ব্যাপারটি আপনার ব্যবসায়িক প্রচারণায় বিবেচনা করুন।
সোশ্যাল মিডিয়াতে আপনার ফলোয়াররা কোন বিষয়ে কীভাবে কথা বলেন, সে ব্যাপারে জানুন। তাদের পছন্দ-অপছন্দ সম্পর্কে ধারণা রাখুন। সে অনুযায়ী আপনার ব্যবসায়িক পেইজের স্ট্যাটাস, ছবি, ভিডিওসহ বিভিন্ন কন্টেন্টের ভাষায় সামঞ্জস্য নিয়ে আসুন।
কাস্টমারদের কথা শুনুন।
সোশ্যাল মিডিয়া এক ধরনের ফ্রি কাস্টমার সার্ভিস। তাই ফলোয়াররা আপনার ব্যবসায়িক পেইজের কন্টেন্টে যেসব মন্তব্য করেন, সেগুলো গুরুত্ব সহকারে পড়ুন। এমনকি কেউ নেতিবাচকভাবে কথা বললেও তার সমস্যা অনুধাবন করুন ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিন। কেউ কোন বিষয়ে সমস্যায় পড়লে যথাসম্ভব সহায়তা দেবার চেষ্টা থাকা জরুরি।
নিয়মিত আপডেট দিন।
ব্যবসায়িক প্রচারের জন্য আপনাকে সোশ্যাল মিডিয়াতে প্রতিনিয়ত সময় দিতেই হবে। এর জন্য ঘণ্টায় ঘণ্টায় কন্টেন্ট পোস্ট করার দরকার নেই। একটি নির্দিষ্ট সময়ে – যখন আপনার অধিকাংশ ফলোয়ার অ্যাক্টিভ থাকে – আপনার ব্যবসায়িক পেইজ আপডেট করুন।
সোশ্যাল মিডিয়াতে সাধারণ ব্যবসায়িক অ্যাকাউন্ট রাখার পাশাপাশি পেইড প্রমোশন (Paid Promotion) চালানো যায়। সে বিষয়ে কথা হবে আরেকদিন। আপনার ব্যবসার প্রসারে সোশ্যাল মিডিয়া কীভাবে ব্যবহার করেন, তা আমাদেরকে জানাতে পারেন কমেন্টের মাধ্যমে