আমাদের অর্থনীতির বড় একটা অংশ কৃষির উপর নির্ভরশীল। বাংলাদেশের জাতীয় জিডিপির ১৯.৬ শতাংশ আসে কৃষিখাত থেকে। বিশ্বব্যাংকের মতে বাংলাদেশের মোট জমির ৬১.২ শতাংশ চাষযোগ্য। তাই কৃষিভিত্তিক উদ্যোগের মাধ্যমে ব্যবসায়িকভাবে লাভবান হবার নানা সুযোগ রয়েছে। তবে চ্যালেঞ্জের সংখ্যাও কম নয়। কৃষিনির্ভর ব্যবসা বা অ্যাগ্রিবিজনেসের সমস্যা অবশ্য বহুমুখী। এবারের লেখায় আমরা শুধু অ্যাগ্রো-ফুড বিজনেসের চ্যালেঞ্জ তুলে ধরবো।
রেজিস্ট্রেশনের জটিলতা
অ্যাগ্রো-ফুড উদ্যোগের জন্য ট্রেড লাইসেন্স, ভ্যাট লাইসেন্স, ট্যাক্স নাম্বার, কীটনাশক ব্যবহারের লাইসেন্স, ইম্পোর্ট ও এক্সপোর্ট লাইসেন্সসহ বিভিন্ন আনুষ্ঠানিক কাগজপত্র থাকা লাগে। অথচ ঠিক কোন ধরনের অনুমতি দরকার হয় ও কীভাবে তা সংগ্রহ করা যায়, তার তথ্য পাওয়া সহজ নয়। ফলে নতুন – বিশেষ করে স্বল্প পুঁজির – উদ্যোক্তাদের জন্য এটি একটি চ্যালেঞ্জ।
উপযুক্ত জমি নির্বাচন
অ্যাগ্রো-ফুড বিজনেসে বিভিন্ন লাইভস্টক পালন করতে হয়। কিন্তু এ কাজের জন্য উপযোগী জমি পছন্দ করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। আবার এর অবস্থানের সাথে গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোর যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হতে হয়। নাহলে শক্তিশালী ও সাশ্রয়ী সাপ্লাই চেইন প্রতিষ্ঠা করা কঠিন।
পুঁজি নির্ধারণ ও সংগ্রহ
অ্যাগ্রো-ফুড বিজনেসের ব্যবস্থাপনা বেশ ব্যয়সাপেক্ষ। তাই প্রয়োজন যথেষ্ট পরিমাণ পুঁজি। কীভাবে এ পুঁজি যোগাড় করা হবে, লোন নিতে হবে কি হবে না, কোন ধরনের আর্থিক প্রতিষ্ঠানে কী পরিমাণে লোন নিতে হবে – এ ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা বেশ চ্যালেঞ্জিং একটা ব্যাপার।
দক্ষ কর্মীর অভাব
লাইভস্টক পালন থেকে শুরু করে খাদ্য প্রসেসিং – অ্যাগ্রো-ফুড বিজনেসের বিভিন্ন কাজ ঠিকভাবে করার জন্য দক্ষ জনবল দরকার। কিন্তু অভিজ্ঞ লোক খুঁজে বের করা কিংবা কর্মীদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার।
ক্লায়েন্ট নির্ধারণ
অ্যাগ্রো-ফুড বিজনেসের পণ্যগুলো চাইলে খোলা বাজারে বিক্রি করা যায়, আবার চাইলে বড় বড় কোম্পানির কাছেও সরবরাহ করা যায়। যেমন, মুরগির ডিমের চাহিদা দুই ধরনের বাজারেই রয়েছে। তাই কোন ক্লায়েন্টের কাছে আপনার পণ্য বিক্রয় করলে অধিক লাভবান হওয়া যাবে আর পরবর্তীতে বাজার দখল করতে সুবিধা পাওয়া যাবে, সে সিদ্ধান্তের উপর ব্যবসার ভবিষ্যৎ নির্ভর করে।