পাইলট

একজন পাইলট সাধারণত ছোট-বড় বিভিন্ন যাত্রীবাহী বা কার্গো ফ্লাইট পরিচালনা করেন। একটি বিমানে সাধারণত দুই ধরনের পাইলট প্রয়োজন হয় – ক্যাপ্টেন ও কো-পাইলট। তারা বিমানের মূল নিয়ন্ত্রণ, এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল রুমের সাথে যোগাযোগ এবং যাত্রী ও ক্রুদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেবার কাজ করে থাকেন। অবশ্য বিমানবাহিনীতে নিযুক্ত পাইলটদের কাজের ধরন আলাদা।

এক নজরে একজন পাইলট

সাধারণ পদবী: পাইলট
বিভাগ: অ্যাভিয়েশন
প্রতিষ্ঠানের ধরন: সরকারি, কোম্পানি
ক্যারিয়ারের ধরন: ফুল-টাইম, চুক্তিভিত্তিক
লেভেল: এন্ট্রি, মিড, টপ
এন্ট্রি লেভেলে সম্ভাব্য অভিজ্ঞতা সীমা: ০ – ২ বছর
এন্ট্রি লেভেলে সম্ভাব্য গড় বেতন: ৳৭৫,০০০ – ৳১০০,০০০
এন্ট্রি লেভেলে সম্ভাব্য বয়স: ২১ – ২৪ বছর
মূল স্কিল: কারিগরি জ্ঞান অর্জনে দক্ষতা, স্থান ও দূরত্ব সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা থাকা, মানসিক চাপ সামলানোর ক্ষমতা, জরুরি মুহূর্তে দ্রুততার সাথে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারা
বিশেষ স্কিল: নেতৃত্ব দানের সামর্থ্য, যোগাযোগের দক্ষতা

একজন পাইলট কোথায় কাজ করেন?

  • বিমান সংস্থা
  • সামরিক বাহিনী

প্রাতিষ্ঠানিক কাজের বাইরে বহু পাইলট ব্যক্তিমালাকানাধীন উড়োজাহাজ চালানোর দায়িত্বে থাকেন।

একজন পাইলটের কাজ কী?

একজন পাইলটের মূল কাজ বিমান চালানো। তবে ফ্লাইট শুরুর আগে-পরে তাকে আরো কিছু কাজ করতে হয়। যেমনঃ

  • আবহাওয়া, ফ্লাইটের রুট ও যাত্রীসংখ্যা সম্পর্কে অবগত থাকা
  • পুরো ফ্লাইটের পরিকল্পনা তৈরি করা
  • ফ্লাইটের আগে বিমানের কারিগরি দিকগুলো তত্ত্বাবধান করা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরীক্ষা করা
  • এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল রুমের সাথে প্রয়োজনীয় যোগাযোগ রাখা
  • প্রতি ফ্লাইট শেষে উড়োজাহাজের লগবুক আপডেট করা
  • প্রয়োজন হলে ফ্লাইটের উপর প্রতিবেদন বানানো ও যেকোন সমস্যার ব্যাপারে কর্তৃপক্ষকে জানানো
  • আবহাওয়া ও পরিবেশের পরিবর্তনের সাথে বা জরুরি পরিস্থিতিতে ধৈর্যের সাথে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা

একজন পাইলটের কী ধরনের যোগ্যতা থাকতে হয়?

শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ স্বীকৃত অ্যাভিয়েশন ইনস্টিটিউট থেকে কোর্স সম্পন্ন করার পর লাইসেন্স নিতে হবে আপনাকে।

পাইলট হতে হলে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে গণিত ও পদার্থবিজ্ঞানসহ উচ্চমাধ্যমিক পাশ করা আবশ্যক।

বয়সঃ সাধারণত আপনার বয়স কমপক্ষে ২১ বছর হতে হবে।

অভিজ্ঞতাঃ যেহেতু এটি একটি ঝুঁকিপূর্ণ পেশা, সেহেতু অভিজ্ঞ পাইলটদের প্রাধান্য বেশি।

একজন পাইলটের কী ধরনের দক্ষতা ও জ্ঞান থাকতে হয়?

  • গণিত ও পদার্থবিদ্যা নিয়ে ভালো জ্ঞান
  • ভূগোল ও কো-অর্ডিনেশন সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা
  • বিমান বিষয়ক তথ্য ও প্রযুক্তি সহজে বোঝার ক্ষমতা
  • কারিগরি জ্ঞান অর্জনে পারদর্শিতা
  • যোগাযোগের দক্ষতা
  • কেবিন ক্রু ও যাত্রীদের স্পষ্ট নির্দেশনা দিতে পারা
  • কঠিন পরিস্থিতিতে দ্রুত ও সঠিক সিদ্ধান্ত নেবার ক্ষমতা
  • মানসিক চাপ সামলে ধৈর্য রাখতে পারা
  • নেতৃত্ব দানের ক্ষমতা

কোথায় শিখবেন বিমান চালনা?

বাংলাদেশে পাইলট হবার ট্রেনিং নেবার জন্য কিছু ভালো অ্যাভিয়েশন ইন্সটিটিউট আছে। এছাড়া দেশের বাইরেও বিভিন্ন ফ্লাইং ট্রেনিং একাডেমি রয়েছে। এগুলো থেকে কোর্স নিয়ে সফলভাবে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে লাইসেন্স পেলে এ পেশায় সহজেই যুক্ত হতে পারেন। উল্লেখ্য যে, দক্ষতা ও যোগ্যতা অনুযায়ী পাইলটদের জন্য বিভিন্ন ধরনের লাইসেন্স রয়েছে।

বাংলাদেশ বিমানবাহিনী অ্যাকাডেমিতে আড়াই বছরের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। এরপর একজন পাইলট বিমানবাহিনীর বিমানচালনার জন্য উপযুক্ত হন।

একজন পাইলটের মাসিক আয় কেমন?

এ পেশায় আকর্ষণীয় অর্থ উপার্জনের সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে দেশীয় বিমান সংস্থায় কো-পাইলটের মাসিক আয় ৳৭৫,০০০ থেকে ৳১০০,০০০ বা তার বেশিও হতে পারে। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে এ আয়ের পরিমাণ আরো বেশি।

এ পেশায় আয় হয় প্রতি ফ্লাইটের হিসাবে, মাসিক ভিত্তিতে নয়। কাজের অভিজ্ঞতা ও দক্ষতার ভিত্তিতে আপনার আয় ৫ থেকে ৬ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

একজন পাইলটের ক্যারিয়ার কেমন হতে পারে?

এ পেশায় ফার্স্ট অফিসার বা কো পাইলট হিসেবে যোগদান করার মাধ্যমে আপনার ক্যারিয়ার শুরু হবে। দীর্ঘমেয়াদী প্রশিক্ষণ ও অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে ক্যাপ্টেন পদে আপনি উন্নীত হতে পারেন। সে ক্ষেত্রে নতুন পাইলটদের প্রশিক্ষণ দিতে পারবেন অথবা আরো বড় এয়ারক্রাফট চালানোর দায়িত্ব পাবেন।

15 thoughts on “পাইলট”

Leave a Comment