পেশাগত প্রয়োজনে আমাদের প্রতিনিয়ত ইমেইল আদান-প্রদান করতে হয়। এক্ষেত্রে ছোটখাটো ভুল অনেক বড় প্রভাব ফেলতে পারে। ভালোভাবে ইমেইল লেখা তাই সবার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কাজটা খুব একটা কঠিন নয়। ইমেইল লেখার প্রয়োজনীয় ৫টি বিষয় সম্পর্কে আজ জেনে নেয়া যাক।
১. পরিষ্কারভাবে ইমেইলের বিষয় লিখুন।
যথাসম্ভব সংক্ষেপে প্রাপককে ইমেইলের মূল বিষয় সম্পর্কে জানান। তাহলে তিনি ইমেইল না পড়েই তার গুরুত্ব ও বক্তব্য সম্পর্কে প্রাথমিক একটা ধারণা পাবেন। যেমন, আপনি কোন প্রতিষ্ঠানে চাকরির সুযোগ সম্পর্কে জানতে চাইছেন। এক্ষেত্রে ইমেইলের বিষয় হিসাবে “Request for Information about Career Opportunities” লিখতে পারেন।
অস্পষ্ট ও অগোছালো শব্দ বা বাক্য ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন। যেমন, আপনি কারো কাছে একটি রিপোর্ট পাঠাচ্ছেন। বিষয় হিসাবে “Important Document” লিখলে ইমেল না পড়ে প্রাপকের পক্ষে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু বোঝা কঠিন।
২. ইমেইলে আনুষ্ঠানিক সম্বোধন ব্যবহার করুন।
“Hey”, “Hi guys” বা “Yo” ইত্যাদি সম্বোধন খুবই অনানুষ্ঠানিক ও ঘরোয়া। এগুলো পেশাদার ইমেইলে কখনো ব্যবহার করবেন না। শুধু “Hello” বা “Hi”-এর মতো সাধারণ সম্বোধন দিয়েই ইমেইল শুরু করতে পারেন।
কারো ডাকনাম বা নামের সংক্ষিপ্ত আকার ব্যবহার করা অনুচিত। যেমন, “Hello Michael”-এর জায়গায় “Hello Mike” লেখা উচিত নয়। প্রাপক যদি পেশাদার ক্ষেত্রে এভাবে নিজের পরিচয় দেন, তবেই শুধু এমন সম্বোধন যথার্থ।
৩. ভাষা ব্যবহারে সতর্ক থাকুন।
এমন ভাষা ব্যবহার করবেন না যাতে প্রাপক তা ভুলভাবে বোঝার সুযোগ পান। আপনার সোজাসুজি কোন বক্তব্যও প্রাপকের কাছে কর্কশ মনে হতে পারে।
লেখার সময় নেতিবাচক শব্দ এড়িয়ে যান। যেমন, ‘failure’, ‘wrong’, ‘rejected’, ‘delay’ ইত্যাদি। সুবিধানুযায়ী “please” শব্দটি ব্যবহার করুন। সাহায্য পেলে প্রাপককে ধন্যবাদ দিন।
যেসব শব্দ ব্যবহার করলে মনে হতে পারে আপনি যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী নন, সেগুলো উল্লেখ না করা শ্রেয়। যেমন, ‘Just’, ‘Actually’, ‘Kind of’, ‘Hopefully’ ইত্যাদি।
৪. বিস্তারিত ব্যাখ্যার প্রয়োজন রয়েছে, এমন কিছু ইমেইলের বক্তব্যে না রাখা বাঞ্ছনীয়।
ইমেইলের দৈর্ঘ্য এর বিষয়বস্তুর উপর নির্ভর করে। এরপরও অতিরিক্ত বড় ইমেইলের প্রতি মানুষের ধৈর্য কম কাজ করে। তাই শুধু গুরুত্বপূর্ণ কথার মধ্যে বক্তব্য সীমাবদ্ধ রাখুন। প্রয়োজনে সাবহেডিং বা বুলেট পয়েন্ট ব্যবহার করুন। তাহলে প্রাপক খুব সহজে আপনার বক্তব্য বুঝতে পারবেন। যেমন, আপনি কোন রিপোর্টের উপর ফিডব্যাক দিচ্ছেন। এক্ষেত্রে প্রথমে রিপোর্টের ভালো দিকগুলো সংক্ষেপে উল্লেখ করতে পারেন। এরপর রিপোর্টের কোন কোন অংশে পরিবর্তন আনতে হবে, সে ব্যাপারে আলাদা প্যারাগ্রাফে লিখুন। এ ফিডব্যাক লেখার জন্য যদি বিস্তারিত ব্যাখ্যার দরকার হয়, তাহলে তা কোন ডকুমেন্টে তুলে অ্যাটাচমেন্ট হিসাবে পাঠিয়ে দিতে পারেন। অথবা, প্রাপকের সাথে ফোন বা সরাসরি কথাবার্তার ব্যবস্থা করুন।
৫. ব্যক্তিগত আলাপ করা থেকে বিরত থাকুন।
পেশাগত কাজে ব্যবহৃত ইমেইলে ব্যক্তিগত আলাপ এড়িয়ে চলা গুরুত্বপূর্ণ। এমনকি ব্যক্তিগত জীবনে প্রাপকের সাথে খুব ভালো পরিচয় থাকলেও ইমেইলে অপ্রাসঙ্গিক কথাবার্তা হওয়া অনুচিত।
বোনাস পরামর্শ: এমন একটি ইমেইল আইডি ব্যবহার করুন যেটিতে পেশাদারিত্বের ছাপ রয়েছে।
পেশাগত কাজে সবসময় ভালো একটি ইমেইল আইডি ব্যবহার করবেন। ভালো হয় আইডিতে নিজের মূল নাম থাকলে। যেমন, আপনার নাম ‘মুকুল আহমেদ’ হলে ‘mukulahmed@gmail.com’ বা ‘ahmedmukul@gmail.com’ আইডি নিতে পারেন।
ইতোমধ্যে একই নামের অন্য কেউ এমন আইডি নিয়ে ফেললে কাজ সম্পর্কিত কোন শব্দ ব্যবহার করুন (উদাঃ csemukul@gmail.com)। কাজের সাথে যায় না, এমন কোন শব্দ এড়িয়ে চলুন (উদাঃ mukul-the-legendary-boss@gmail.com)।
বহু প্রতিষ্ঠান বর্তমানে নিজেদের কর্মীদের জন্য আনুষ্ঠানিক ইমেইল আইডি তৈরি করে দেয়। এক্ষেত্রে নিজের নামের আইডি পাওয়া তুলনামূলকভাবে সহজ।