একজন গ্রাফিক ডিজাইনার গ্রাহকের চাহিদা ও প্রজেক্টের ধরন অনুযায়ী বিভিন্ন ইমেজ, ডিজাইন বা ভিজুয়াল কন্টেন্ট তৈরির দায়িত্বে থাকেন। বিজ্ঞাপন থেকে শুরু করে ম্যাগাজিন – বর্তমানে প্রায় সব ক্ষেত্রে এ পেশার চাহিদা রয়েছে।
এক নজরে একজন গ্রাফিক ডিজাইনার
সাধারণ পদবী: গ্রাফিক ডিজাইনারবিভাগ: ক্রিয়েটিভ ক্যারিয়ার
প্রতিষ্ঠানের ধরন: সরকারি, বেসরকারি, প্রাইভেট ফার্ম, কোম্পানি, ফ্রিল্যান্সিং
ক্যারিয়ারের ধরন: ফুল-টাইম, পার্ট-টাইম, চুক্তিভিত্তিক
লেভেল: এন্ট্রি, মিড
এন্ট্রি লেভেলে অভিজ্ঞতা সীমা: ০ – ২ বছর
এন্ট্রি লেভেলে সম্ভাব্য গড় বেতন: ৳১৫,০০০ – ৳২০,০০০
এন্ট্রি লেভেলে সম্ভাব্য বয়স সীমা: ২০ – ২৫ বছর
মূল স্কিল: সৃজনশীল চিন্তা করার ক্ষমতা, আঁকাআঁকির দক্ষতা, ডিজাইন সফটওয়্যার ব্যবহারে পারদর্শিতা
বিশেষ স্কিল: যোগাযোগের দক্ষতা, সমস্যা সমাধানের দক্ষতা
গ্রাফিক ডিজাইনারের পেশা সম্পর্কিত প্রশ্ন
একজন গ্রাফিক ডিজাইনার কোথায় কাজ করেন?
- সরকারি প্রজেক্টে, যেখানে মার্কেটিং বা ভিজুয়াল রিপোর্টিংয়ের কাজ রয়েছে
- বেসরকারি প্রজেক্টে
- প্রাইভেট ফার্ম বা কোম্পানিতে, যেমনঃ বিজ্ঞাপনী সংস্থা
- ফ্রিল্যান্সিং
একজন গ্রাফিক ডিজাইনারের কাজ কী?
- ক্লায়েন্টের বা প্রতিষ্ঠানের চাহিদা সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা নেয়া ও পুরো কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত এ ব্যাপারে যোগাযোগ রাখা
- ডিজাইনের প্রাথমিক লেআউট তৈরি করা
- প্রজেক্টের জন্য গ্রাফিক্স, অ্যানিমেশন কিংবা ডিজিটাল ফটোগ্রাফি ডিজাইন করা
- ক্লায়েন্টের বা প্রতিষ্ঠানের কাছে প্রাথমিক ডিজাইন উপস্থাপন করা
- প্রজেক্ট বা প্রতিষ্ঠানের সাথে ডিজাইনের সামঞ্জস্য বজায় রাখা
- প্রয়োজন হলে ডিজাইন এডিট করা
- কাজ শেষ হবার পর ক্লায়েন্টের কাছে মূল ডিজাইন হস্তান্তর করা
একজন গ্রাফিক ডিজাইনারের কী ধরনের যোগ্যতা থাকতে হয়?
শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ গ্রাফিক ডিজাইনে প্রাতিষ্ঠানিক যোগ্যতার চেয়ে কাজের দক্ষতার উপর বেশি জোর দেয়া হয়। তবে আমাদের দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে এ বিষয়ের উপর ডিপ্লোমা ডিগ্রি ও সার্টিফিকেট কোর্স নিতে পারেন।
বয়সঃ কোন প্রতিষ্ঠানে গ্রাফিক ডিজাইনার হিসাবে যোগ দিতে হলে কাজ ও প্রতিষ্ঠানসাপেক্ষে বয়সের সীমা নির্ধারিত হয়। তবে ফ্রিল্যান্সিংয়ের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কোন বয়স নেই।
অভিজ্ঞতা ও পোর্টফোলিও এ পেশায় অভিজ্ঞদের প্রাধান্য রয়েছে। সাধারণত ১-২ বছরের অভিজ্ঞতা কাজে আসে। বড় কোন প্রজেক্টে কাজ করার জন্য পোর্টফোলিও থাকা অত্যন্ত জরুরি।
একজন গ্রাফিক ডিজাইনারের কী ধরনের দক্ষতা ও জ্ঞান থাকতে হয়?
প্রজেক্টের উপর টেকনিক্যাল জ্ঞানের ধরন নির্ভর করে। সাধারণত যেসব গ্রাফিকস সফটওয়্যারে দক্ষতা দরকার হয়, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে –
- Adobe Photoshop
- Adobe Illustrator
- Adobe InDesign
- GIMP
- Inkspace
- CorelDRAW
- QuarkXPress
টেকনিক্যাল জ্ঞানের পাশাপাশি আলাদা কিছু দক্ষতাও অর্জন করতে হবে আপনাকে। এর মধ্যে রয়েছেঃ
- সৃজনশীল উপায়ে সমস্যা সমাধানের দক্ষতা
- অস্পষ্ট কোন ধারণাকে ডিজাইনার মাধ্যমে পরিষ্কারভাবে ফুটিয়ে তোলা
- বিশ্লেষণী ক্ষমতা, যা খুঁটিনাটি বিষয়গুলো পর্যবেক্ষণে সাহায্য করতে পারে
- নিজে নিজে কাজ করার পাশাপাশি অন্যদের সাথেও কাজ করার মানসিকতা থাকা
- বিভিন্ন ধরনের কাজ একসাথে সামলানোর দক্ষতা
কোথায় পড়বেন গ্রাফিক ডিজাইন?
আমাদের দেশে শুধু গ্রাফিক ডিজাইনের উপর সরাসরি স্নাতক ডিগ্রি লাভের সুযোগ সীমিত। তবে ফাইন আর্টস বা মাল্টিমিডিয়া সম্পর্কিত ডিগ্রিগুলোতে এ বিষয়ে পড়াশোনা করার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। তবে বিভিন্ন মেয়াদের ডিপ্লোমা ও সার্টিফিকেট কোর্স করার মাধ্যমে আপনি গ্রাফিক ডিজাইনের টেকনিক্যাল জ্ঞান অর্জন করতে পারেন।
একজন গ্রাফিক ডিজাইনারের মাসিক আয় কেমন?
কাজ ও প্রতিষ্ঠানের ধরন অনুযায়ী একজন গ্রাফিক ডিজাইনারের আয় বিভিন্ন অঙ্কের হতে পারে। এন্ট্রি লেভেলে এ পেশায় সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে শুরু থেকেই ৳১৫,০০০ – ৳২০,০০০ আয়ের সুযোগ রয়েছে। আপনার কাজের পোর্টফোলিও যত ভালো হবে, আয় তত বেড়ে যাবে। বিশেষ করে প্রাতিষ্ঠানিক কাজের বাইরে ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে রয়েছে ভালো অর্থ আয়ের সুযোগ।
একজন গ্রাফিক ডিজাইনারের ক্যারিয়ার কেমন হতে পারে?
গ্রাফিক ডিজাইনে অভিজ্ঞতার সাথে আয় বাড়লেও অন্যান্য ক্যারিয়ারের মতো খুব বেশি পদ নেই। এন্ট্রি লেভেলে অ্যাসিস্ট্যান্ট গ্রাফিক ডিজাইনার হিসাবে ক্যারিয়ার শুরু হতে পারে। তবে মার্কেটিং সম্পর্কে ভালো জ্ঞান থাকলে সিনিয়র পদে উন্নীত হবার সম্ভাবনা রয়েছে।
অনেক গ্রাফিক ডিজাইনার ওয়েব ডিজাইনের কাজ শিখে ইউজার এক্সপেরিয়েন্স (UX) বা ইউজার ইন্টারফেস (UI) ডিজাইনার হিসাবেও কাজ করে থাকেন।