আয় বা ব্যবহারকারীর দিক থেকে গ্রামীণফোন বাংলাদেশের প্রধান মোবাইল অপারেটর। সুন্দর কাজের পরিবেশ, অন্যান্য বহুজাতিক কোম্পানির তুলনায় ভালো বেতন কাঠামো, পেশাজীবী হিসাবে মর্যাদা – সবকিছু বিবেচনা করলে গ্রামীণফোনে চাকরি অনেকের জন্যই আকর্ষণীয় একটি সুযোগ।
ইন্টারভিউর জন্য বিভিন্ন মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি ও টেলিকম অপারেটরদের সাধারণ কিছু নিয়ম থাকে। তবে মূলত গ্রামীণফোনের আলোকে নতুন গ্র্যাজুয়েটদের জন্য আজকের এ লেখা। এ প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতে চাইলে নিচের বিষয়গুলোর দিকে মনোযোগ দিনঃ
১. যে চাকরির জন্য আবেদন করছেন, সে সম্পর্কে অবশ্যই আপনাকে জেনে আসতে হবে
বিষয়ভিত্তিক জ্ঞান বাদ দেয়া যাবে না। যেমনঃ ইঞ্জিনিয়ারিং পোস্টে আবেদন করলে টেলিকমিউনিকেশনের প্রাথমিক ধারণা থাকা খুব প্রয়োজনীয়।
গ্রামীণফোনের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে কাজের বিবরণ দেয়া থাকে। তা ভালোমতো দেখে আসুন। কীওয়ার্ডগুলো লক্ষ করুন। প্রস্তুতি নিয়ে আবেদন করাই ভালো। এর কারণ হলো, প্রায় যেকোন নিয়োগের জন্য আপনাকে বিষয়ভিত্তিক পরীক্ষায় বসতে হতে পারে।
২. গ্রামীণফোন সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্য জেনে আসবেন
গ্রামীণফোনের মূল ব্যবসাটাই টেলিকমের। তাই বাংলাদেশে টেলিকম শিল্পের যাত্রা, গ্রামীণফোনের ভূমিকা, বর্তমানে ব্যবহৃত প্রযুক্তি (উদাহরণঃ 2G, 3G বা 4G), গ্রামীণফোনের মূল কোম্পানি ‘টেলিনর’ – এগুলো সম্পর্কে জেনে রাখুন, আপনার পোস্ট যে বিভাগেই হোক।
একটা ব্যাপার অনেকের জানা নেই। পাবলিক কোম্পানি হবার কারণে গ্রামীণফোনের বার্ষিক প্রতিবেদন পড়ার সুযোগ সবার জন্য উন্মুক্ত। গত বছরের প্রতিবেদনের মূল অংশ দেখে যেতে বেশি সময় লাগবে না।
৩. গ্রামীণফোনে চাকরি করার জন্য সবাইকেই একটা সাধারণ অ্যাপ্টিচ্যুড টেস্টের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়
টেস্টের ধরন প্রতি বছর পরিবর্তিত হলেও মূল উদ্দেশ্য মোটামুটি এক রকম থাকে – পরীক্ষার্থীর সাধারণ গণিত ও ইংরেজির দক্ষতা বা বহু তথ্য থেকে দরকারি তথ্য বের করার ক্ষমতা যাচাই করা। এছাড়া, হুট করে পরীক্ষা নেবার মাধ্যমে আপনার প্রতিক্রিয়া মূল্যায়ন করা সম্ভব হয় কর্তৃপক্ষের জন্য।
সময় নিয়ে প্রস্তুতি নিন বিভিন্ন বিষয়ের উপর। বর্তমানে অনলাইনে বিনামূল্যে টেস্টিং ম্যাটেরিয়াল পাওয়া যায়। আবার নিয়মিত ইংরেজি লেখা পড়ার অভ্যাস থাকলে ভালো। এটা যেকোন ইন্টারভিউতে কাজে দেবে আপনাকে। এর বাইরে আইবিএ (IBA) ভর্তি পরীক্ষার ইংরেজি বিষয়ের সমস্যাগুলোর সমাধান করে দক্ষতা বাড়াতে পারেন।
৪. প্রাথমিক পর্যায়ের ব্যবসায়িক ধারণা থাকা ভালো
Return on Interest (ROI), Fixed and Variable Cost, Profit Margin, Opportunity Cost – এসব বিষয়ে ধারণা নিয়ে রাখতে পারেন। ছোটখাটো পরীক্ষা নেয়া হলে সুবিধা হবে আপনার।
৫. প্রেজেন্টেশন দক্ষতা বাড়ান
অন্য বহুজাতিক কোম্পানির মতো গ্রামীণফোনও আপনাকে একটা বা দুইটা প্রেজেন্টেশন বা গ্রুপ ডিসকাশন সেশনের মধ্য দিয়ে নিয়ে যেতে পারে। নতুন গ্র্যাজুয়েটদের কাছ থেকে অসাধারণ প্রেজেন্টেশন দক্ষতা কেউ হয়তো আশা করবে না। কিন্তু ভালোমতো কথা বলতে পারা, নিজের চিন্তাভাবনা পরিষ্কারভাবে প্রকাশ করতে পারা কিংবা গ্রুপ ডিসকাশনে অন্যদের সামনে পড়ে আমতা আমতা না করা – এতটুকু দক্ষতা অর্জনের চেষ্টা করা উচিত।
৬. নিজের সিভি (CV) সম্পর্কে সচেতন থাকুন
সিভি সম্পর্কে প্রায় সবাই একটা কথা বলে – সাধারণ টেমপ্লেটে বানানো বা যে কথা সবাই বলে, এমন কথা দিয়ে সিভি বানানো খুব একটা কার্যকরী নয়।
ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ও দক্ষতাকে তুলে ধরতে পারে, এমন সিভিই দরকার আপনার। গ্রামীণফোনের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। সিভিতে নিজের কর্মকাণ্ড হিসেবে যা উল্লেখ করবেন, তার উপর বিস্তারিত ইন্টারভিউ হতে পারে। কাল্পনিক পরিস্থিতিতে ফেলে আপনার টিমওয়ার্ক বা নেতৃত্বগুণ পরীক্ষা করতে পারেন নিয়োগদাতারা। এজন্য সতর্কতার সাথে সিভিতে তথ্য ব্যবহার করুন। দরকার হলে সিভির খুঁটিনাটি যাচাই করে নিন।
৭. নৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিচয় দিন
গ্রামীণফোন ও তার মূল কোম্পানি টেলিনর কোড অব এথিক্স (Code of Ethics) মেনে চলার জন্য বেশ পরিচিত। নিয়োগদাতারা তাই তাদের ভবিষ্যৎ কর্মীদের মধ্যেও এর প্রতিফলন দেখতে চাইবে। তাই ইন্টারভিউর সময় এ বিষয়ে আপনাকে প্রশ্ন করা হতে পারে। নৈতিকভাবে কাজ করার ব্যক্তিগত ইচ্ছা ও সামর্থ্য যেন আপনার উত্তরে প্রকাশ পায়, সেদিকে মনোযোগ রাখুন।
I ask for your help on a variety of topics as I prepare for a job at Grameenphone.
আপনি কোন চাকরির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন? (আমরা গ্রামীণফোনের নিয়োগ প্রক্রিয়ার সাথে কোনভাবে যুক্ত নই। এ কন্টেন্ট গ্রামীণফোন বা বিভিন্ন টেলিকম কোম্পানিতে কাজ করার জন্য একটা গাইডলাইন মাত্র।)