আমাদের দেশের শহর এলাকাগুলোতে দিন দিন ফাস্ট ফুডের চাহিদা বেড়ে চলেছে। তাই এ ইন্ডাস্ট্রির রয়েছে উজ্জ্বল সম্ভাবনা। তবে ফাস্ট ফুড ব্যবসায় সাফল্য অর্জন করার জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে আপনাকে।
১. রেস্টুরেন্টের জন্য ভালো জায়গা বেছে নিন।
আপনার রেস্টুরেন্টের অবস্থান কাস্টমারদের পছন্দসই না হলে ব্যবসা টিকিয়ে রাখা খুব কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। তাই এমন কোন জায়গা নির্বাচন করুন যেখানে আপনার কাস্টমারদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি আর প্রতিযোগীর সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম। যেমন, আপনি যদি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের জন্য ফাস্ট ফুড পরিবেশন করতে চান, তাহলে ক্যাম্পাসের কাছে রেস্টুরেন্টের প্লট নেয়া লাভজনক হতে পারে।
২. প্রয়োজনীয় লাইসেন্স ও অনুমতি সংগ্রহ করুন।
আইনসম্মতভাবে ব্যবসা শুরুর জন্য আনুষ্ঠানিক কিছু কাগজপত্র লাগবে আপনার। যেমনঃ
১) ট্রেড লাইসেন্স
২) ফায়ার লাইসেন্স
৩) ভ্যাট সার্টিফিকেট
৪) হেলথ সার্টিফিকেট
অত্যাবশ্যকীয় প্রায় সকল সার্টিফিকেট আর অনুমতি মিউনিসিপ্যাল অফিস ও বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) থেকে পাওয়া যায়। যথাযথ আবেদনের ভিত্তিতে ফি পরিশোধ করলে লাইসেন্স ও সার্টিফিকেটগুলো পেয়ে যাবেন।
৩. কাস্টমারদের চাহিদার দিকে খেয়াল রাখুন।
আপনার কাস্টমাররা কোন ধরনের খাবারের প্রতি বেশি আগ্রহী, সে ব্যাপারে জানার চেষ্টা করুন। এর জন্য অনলাইন ও অফলাইন সার্ভের আয়োজন করতে পারেন। সাথে কাস্টমার ফিডব্যাক নিতে পারেন। এছাড়া ফেসবুকের বিভিন্ন পেইজে বা গ্রুপ খোলার মাধ্যমে যোগাযোগ রাখতে পারেন কাস্টমারের সাথে। এতে সহজে তাদের চাহিদা সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা পাবেন।
৪. মানসম্মত ও পরিচ্ছন্ন খাবার নিশ্চিত করুন।
নিজেকে একজন কাস্টমার হিসাবে ভাবলে ব্যাপারটা পরিষ্কার হয়ে যাবে। নিম্নমানের অপরিচ্ছন্ন খাবার পরিবেশন কখনো গ্রহণযোগ্য নয়। তাই ফাস্ট ফুডের প্রতিদিনের উপাদান প্রতিদিন যোগাড় করার ব্যবস্থা করুন। এতে তার মান ভালো থাকে। পুরানো খাবার পরিবেশন করা থেকে বিরত থাকুন।
প্রতিদিন ফ্রেশ খাবার নিশ্চিত করতে সাপ্লাই চেইনকে উন্নত করতে হবে। উন্নত মানের খাবার দ্রুত প্রস্তুতের জন্য রয়েছে বিভিন্ন কোর্স। বিভিন্ন রান্না বিষয়ক প্রতিষ্ঠান এ সুবিধাগুলো প্রদান করে থাকে। আর বেশিরভাগ সময়ই কাস্টমার উন্নতমানের খাবারের জন্য একটু বেশি দাম পরিশোধ করতেও প্রস্তুত থাকে। তাই মূল্যের দিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব না দিয়ে মানের উপর জোর দিন।
৫. মার্কেটিংয়ের জন্য সময় ও বাজেট বরাদ্দ রাখুন।
ফাস্ট ফুড ব্যবসায় সাফল্য লাভের জন্য দক্ষ মার্কেটিংয়ের প্রয়োজন অনেক। কাস্টমারদের আকর্ষণ ধরে রাখার জন্য সাপ্তাহিক প্যাকেজ অফার করতে পারেন। ছুটির দিনের ক্ষেত্রে ডিসকাউন্ট আর ফ্যামিলি প্যাকের ব্যবস্থা রাখা যেতে পারে। এছাড়া নিয়মিত কাস্টমারদের জন্য বিশেষ সুবিধা দিতে পারেন।
পত্রিকা, রেডিও বা টেলিভিশনে বিজ্ঞাপন দেয়া ব্যয়বহুল ব্যাপার। কিন্তু বর্তমানে অনলাইন মিডিয়ার কল্যাণে আপনি ইন্টারনেটে আর সোশ্যাল মিডিয়াতে অল্প খরচে প্রচারণা চালাতে পারেন। এতে করে সম্ভাব্য কাস্টমাররা আপনার রেস্টুরেন্টের অফারগুলো সম্পর্কে জানতে পারবেন।
৬. রেস্টুরেন্টের পরিবেশ সুন্দর করে তুলুন।
ওয়েটারসহ সব ধরনের কর্মী যেন কাস্টমারদের সাথে ভালো ব্যবহার করেন, তার দিকে খেয়াল রাখতে হবে আপনাকে। এতে করে কাস্টমাররা শুধু স্বাচ্ছন্দ্যবোধই করবেন না, তারা অন্যদের কাছেও আপনার রেস্টুরেন্টের কথা বলবেন।
সঠিক পরিকল্পনা, মানসম্মত খাবার, ভালো মার্কেটিং আর চমৎকার পরিবেশনা – এ বিষয়গুলো ভালোভাবে বাস্তবায়ন করতে পারলে আপনি তুলনামূলকভাবে কম সময়ের মধ্যে ফাস্ট ফুড ব্যবসায় সাফল্য অর্জন করতে পারবেন।
ফুড হোম ডেলিভারী ব্যবসা করবো
পরামর্শ চাই