বিসিএস পরিসংখ্যান: পরিসংখ্যান কর্মকর্তা

বিসিএস পরিসংখ্যান ক্যাডার একটি টেকনিক্যাল ক্যাডার পদ পরিসংখ্যান, গণিত, অর্থনীতি এবং বাণিজ্যিক বিভাগে ডিগ্রিধারীরাই এ ক্যাডার পদে কাজের সুযোগ পান এ ক্যাডারের কর্মকর্তাগণ বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) এবং পরিসংখ্যান বিভাগে কাজ করেন

সাধারণ পদবী:  পরিসংখ্যান কর্মকর্তা

বিভাগ:  পরিসংখ্যান বিভাগ

কর্মস্থলঃ  উপজেলা/থানা পরিসংখ্যান অফিস

ক্যারিয়ারের ধরন: ফুল টাইম

লেভেল: এন্ট্রি

অভিজ্ঞতা: পূর্ব অভিজ্ঞতার প্রয়োজন নেই। বিসিএস (পরিসংখ্যান) ক্যাডার হিসেবে উত্তীর্ণ হলে বাংলাদেশ লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ৬ মাসের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

বেতন সীমা: জাতীয় বেতন স্কেলের নবম গ্রেড অনুযায়ী মূল বেতন ২২ হাজার টাকা। কর্মস্থল অনুযায়ী বাড়ি ভাড়া ও অন্যান্য ভাতা মিলিয়ে শুরুতে মাসিক বেতন ৩৫-৩৭ হাজার

বয়স সীমা:  বিসিএস সার্কুলার যে মাসে দেওয়া হবে সে মাসের প্রথম দিন একজন প্রার্থীর বয়স ২১-৩০ এর মধ্যে হতে হবে। তবে মুক্তিযোদ্ধা সনদধারী ব্যক্তিদের সন্তান, পৌত্র-পৌত্রী ও স্বাস্থ্য ক্যাডারদের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩২ বছর। আদিবাসী প্রার্থীদের জন্য সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩২ বছর 

মূল স্কিল : পরিসংখ্যান পদ্ধতি সংক্রান্ত জ্ঞান, বিশ্লেষণী দক্ষতা, প্রয়োজনীয় কম্পিউটার সফটওয়্যার ব্যবহারে পারদর্শী, জরিপ পরিচালনা

বিশেষ স্কিল:  সূক্ষ পর্যবেক্ষণ, নির্ভুলভাবে কাজের দক্ষতা, নেতৃত্ব দেবার দক্ষতা

একজন পরিসংখ্যান কর্মকর্তা কোন ধরনের প্রতিষ্ঠান বা শিল্পে কাজ করেন?

একজন বিসিএস পরিসংখ্যান ক্যাডার বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) এবং পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অধীনস্ত পরিসংখ্যান বিভাগে কাজ করেন। কর্মজীবনের শুরুতে একজন পরিসংখ্যান কর্মকর্তা উপজেলা পরিসংখ্যান অফিস এবং সিটি কর্পোরেশন এলাকায় দায়িত্বপ্রাপ্ত হলে থানা পরিসংখ্যান অফিসে কাজ করেন।

একজন পরিসংখ্যান কর্মকর্তা কী ধরনের কাজ করেন?

উপজেলা পরিসংখ্যান অফিস এর উল্লেখযোগ্য কার্যক্রমগুলি হলঃ জনসংখ্যা বিষয়ক পরিসংখ্যান প্রদান, আদমশুমারি ও গৃহগণনা কার্যক্রম, কৃষি শুমারি, অর্থনৈতিক শুমারি, মাসিক ভোক্তা সূচক (CPI) তথ্য সংগ্রহ, সেম্পল ভাইটাল রেজিস্টেশন সিস্টেম, মাল্টিপল ইন্ডিকেটর ক্লাস্টার সার্ভে,প্রধান-অপ্রধান মোট ১২৪ টি ফসলের প্রাক্কলন করা, প্রধান ফসলের পূর্বাভাস জরিপ,বিভিন্ন ফসলের উৎপাদন আনুমানিক হিসাব, ফসলাধীন জমির পরিমান ও ভূমির ব্যবহার সংক্রান্ত পরিসংখ্যান প্রস্তুত, বিভিন্ন ফসলের ক্ষয়-ক্ষতি নিরুপণ,কৃষি মূল্য মুজরী তথ্য সংগ্রহ,বন জরিপ, গবাদি পশু ও হাস-মুরগী জরিপ, মাছ উৎপাদন জরিপ, ক্লাস্টার হালনাগাদকরণ ও সম্পসারণ এবং উৎপাদন খরচ জরিপ, কুটির শিল্প জরিপ, বিভিন্ন শুমারি ও সার্ভে কাজে গণনাকারী ও সুপারভাইজারদের প্রশিক্ষণ প্রদান প্রভৃতি। একজন উপজেলা/থানা পরিসংখ্যান কর্মকর্তা এসকল কার্যক্রমের নেতৃত্বে থাকেন এবং জনগণকে পরিসংখ্যান তথ্য সংক্রান্ত সেবা দিয়ে থাকেন। 

একজন পরিসংখ্যান কর্মকর্তার শিক্ষাগত যোগ্যতা কী?

বিসিএস পরিসংখ্যান ক্যাডার হতে চাইলে যে কোন স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় হতে স্নাতক পর্যায়ে অর্থনীতি, পরিসংখ্যান অথবা পরিসংখ্যানসহ অর্থনীতি অথবা গণিতে প্রথম শ্রেণি বা সমমানের জিপিএ’তে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অথবা দ্বিতীয় শ্রেণি বা সমমানের জিপিএ’তে অনার্সসহ দ্বিতীয়শ্রেণি বা সমমানের জিপিএ’তে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অথবা বাণিজ্য যে কোন শাখায় অথবা সমাজ বিজ্ঞানের বিষয়ে সমমানের ডিগ্রি অথবা উল্লিখিত যে কোন একটি বিষয়ে ৪ বছর মেয়াদি দ্বিতীয় শ্রেণি বা সমমানের জিপিএ’তে অনার্স থাকতে হবে 

একজন পরিসংখ্যান কর্মকর্তার কী কী দক্ষতা ও জ্ঞান থাকতে হয়?

  •        পরিসংখ্যানের বিভিন্ন পদ্ধতি নিয়ে স্পষ্ট ধারণা থাকতে হবে
  •        গাণিতিক বিশ্লেষণ এবং প্রয়োজনীয় কম্পিউটার সফটওয়্যার ব্যবহারে পারদর্শী হতে হবে
  •        গাণিতিক সমস্যা সমাধানে দক্ষ হতে হবে
  •        জরিপ পরিচালনা করার দক্ষতা থাকতে হবে
  •        ভালো যোগাযোগের দক্ষতা থাকতে হবে
  •        হিসাবে নির্ভুল হতে হবে এবং সূক্ষ তথ্যের প্রতিও লক্ষ্য রাখতে হবে
  •        পরিসংখ্যান ব্যুরোর নিয়ম কানুন সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকতে হবে
  •        জরিপে অংশগ্রহণকারী কর্মীদের প্রশিক্ষণ ও দিক নির্দেশনা দেবার পর্যাপ্ত জ্ঞান থাকতে হবে
  •        সময়মত কাজ সম্পাদনের দক্ষতা থাকতে হবে
  •        সমগ্র দলকে নেতৃত্ব দিতে সক্ষম হতে হবে

একজন পরিসংখ্যান কর্মকর্তার কাজের ক্ষেত্র ও সুযোগ কেমন?

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো দেশে পরিসংখ্যানের জন্য একমাত্র রাষ্ট্রীয় সংস্থা বিধায় বর্তমানে এর কাঠামোগত উন্নয়নের দিকে জোর দেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর আওতায় প্রতিটি  উপজেলায় এখন উপজেলা পরিসংখ্যান অফিস কার্যক্রম পরিচালনা করছে। উপজেলা পরিসংখ্যান অফিসের নেতৃত্বে থাকেন একজন পরিসংখ্যান কর্মকর্তা যিনি একজন বিসিএস পরিসংখ্যান ক্যাডার। কাজেই বিসিএস পরিসংখ্যান ক্যাডারদের কাজের সুযোগ অনেক বেশি। সর্বশেষ ৩৮ তম বিসিএস এ ২টি এবং ৩৬ তম বিসিএস এ ১০টি পরিসংখ্যান কর্মকর্তার ফাঁকা পদের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছিল। একজন পরিসংখ্যান ক্যাডার পরিসংখ্যান ব্যুরোর উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় দপ্তরের পাশাপাশি পরিসংখ্যান ব্যুরোর সদর দপ্তর এবং পরিসংখ্যান বিভাগের বিভিন্ন উচ্চপদে কাজের সুযোগ পান।

একজন পরিসংখ্যান কর্মকর্তার মাসিক আয় কেমন?

কর্মজীবনের শুরুতে একজন উপজেলা/থানা পরিসংখ্যান কর্মকর্তা জাতীয় বেতন স্কেল-২০১৫ এর গ্রেড ৯ অনুযায়ী ৩২-৩৭ হাজার টাকা বেতন পান। এ গ্রেডে সর্বোচ্চ বেতন ৫৩ হাজার টাকা।

ক্যারিয়ার কেমন হতে পারে একজন পরিসংখ্যান কর্মকর্তার?

একজন বিসিএস পরিসংখ্যান ক্যাডার হিসেবে শুরুতে উপজেলা/থানা পরিসংখ্যান কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করতে হয়। এর পদ পদোন্নতি হয়ে জেলা পরিসংখ্যান অফিস ও বিভাগীয় পরিসংখ্যান অফিসে যথাক্রমে উপ-পরিচালক ও-যুগ্ম পরিচালক পদে কাজ করেন। একজন যুগ্ম-পরিচালক পদোন্নতি পেয়ে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সদর দপ্তরে যে কোন শাখায় পরিচালক হতে পারে। একজন পরিসংখ্যান ক্যাডার বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর শীর্ষ পদদ্বয় যথাক্রমে উপ-মহাপরিচালক এবং মহাপরিচালক হবার সুযোগ পান। এছাড়াও পরিসংখ্যান বিভাগের উচ্চপদে কাজেরও সুযোগ থাকে।

 

Leave a Comment